মিডিয়া ভূবন ডেস্ক : একটানে শেষে করে ফেলার মতো উপন্যাস ‘সন্ধ্যার পরে’ ঝটিতে অহনা তমালের দিকে তাকায়। অহনার কপালের কাছটায় সামান্য কাটা দাগ। কীভাবে কেটেছিল? পড়ে গিয়ে? এই মেয়ে কী খুব দুষ্টু? অবশ্য যারা সরল, সোজা সাপটা বলতে পারে, তারা দুষ্টুই হয়। ঠোঁটকাটা স্বভাব তো। তমাল চোখ সরিয়ে নিল। অহনা বলল- ‘ভাগ্যিস, আপনি দেখেছিলেন, না হলে রক্তশূন্য হয়েই সেদিন মারা যেতাম। জানেন, আমি না রক্ত একদমই সহ্য করতে পারি না। মানে একসাথে বেশি রক্ত দেখলেই আমার মাথা ঘোরে।‘
চা শেষ করে তমাল মগটা নামিয়ে রাখলো। অহনার ফোন বাজল। পার্স থেকে ফোনটা বের করে দেখল। তারপরে কানে লাগিয়ে বললো, ‘আম্মু আমি বাগানে, হ্যাঁ হ্যাঁ চলে আসবো। চিন্তা করোনা।’

‘সন্ধ্যার পরে’ এক মানসিক যুবকের বিপর্যস্ত হয়ে যাওয়ার গল্প, পরম যত্নে ক্ষত সারিয়ে তোলার চেষ্টায় মগ্ন কিশোরী। তাকে এড়িয়ে যায় তমাল। গিয়ে পরিচয় ট্রেনবে নীরার সঙ্গে-
একদম কাটায় কাটায় ট্রেন ৯ টা ১০ মিনিটে ছাড়লো। সমুদ্রের এমন অভিজ্ঞতা খুবই কম। রেলের শহরে বড় হওয়া ছেলেটি ট্রেনের সঠিক জ্ঞান সম্পর্কে সন্দিহান, এটা অবিশ্বাস্য। কিন্তু আসলেই তাই। কখনো সঠিক সময়ে ট্রেন ছাড়তে দেখেনি সে। অন্তত সর্বনিম্ন এক মিনিট লেইট হলেও দেরিতে ছেড়েছে। পঞ্চগড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশন ছেড়ে যাচ্ছে একতা এক্সপ্রেস। স্টেশনের আলো ধীরে ধীরে কমে আসছে। জানালার দিকে, চেয়ে চেয়ে অপসৃয়মান স্টেশনের দিকে তাকিয়ে ছিল। মনে একটা খারাপ লাগা কাজ করছে।
তমালের কাছাকাছি বয়সের এক যুবক, বার্থের দরজা খুলে হাসিমুখ করে ওর দিকে এক ঝলক তাকিয়ে ব্যাগটা হাতে নিয়ে সিটের নিচে রাখল। পেছনে একজন নারী, সম্ভবত সঙ্গের যুবকের স্ত্রী।